বেশ কিছুদিন বিনিয়োগকারীরা নতুন শেয়ারে আশানুরুপ মুনাফা করতে পারলেও সম্প্রতি পরিস্থিতি উল্টো দিকে মোড় নিয়েছে। ফলে নতুন শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্রমেই কমতে শুরু করেছে। আর এভাবে চলতে থাকলে নতুন কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে যাবে যা আইপিও বাজারকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
চলতি বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ, প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস, আর্গন ডেনিমস, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার, গ্লোবাল হেভী কেমিক্যালস ইত্যাদি কোম্পানির শেয়ারে ইতিমধ্যে লোকসান গুণছেন বিনিয়োগকারীরা। যদিও লেনদেনের শুরুতে এসব শেয়ার থেকে বিনিয়োগকারীরা আশানুরুপ মুনাফা করতে পেরেছিলেন। বিগত কয়েক কার্যদিবস ধরে সেকেন্ডারি মার্কেটে মন্দা এবং নতুন কোম্পানির শেয়ারে প্রথম দিন থেকে মার্জিন লোন চালু থাকা না থাকা নিয়ে দোলাচলের কারণে আইপিও বাজার ক্রমেই স্তিমিত হচ্ছে বলে অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন।
এদিকে উপরোক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারে আইপিও বিজয়ীরা লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়েছেন যারা সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে এসব শেয়ার কিনেছেন। কারণ, প্রায় প্রত্যেকটি শেয়ারের দর অর্ধেকের কাছাকাছি নেমে গেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, গ্লোবল হেভী কেমিক্যালস লিমিটেডের শেয়ার দর প্রথম কার্যদিবসে ৯৯.৪০ টাকায় লেনদেন হয়েছিল। এর পরবর্তী ১৪ কার্যদিবসে টানা পতনে এ শেয়ারের দর বর্তমানে ৫৮.৩০ টাকায় স্থির হয়েছে।
প্রিমিয়ার সিমেন্টের শেয়ার দর লেনদেনের ২য় কার্যদিবসে ছিল ১১৫ টাকা। এরপর ১৫ কার্যদিবসের ব্যবধানে এ শেয়ারের দর টানা পতনে ৬৭.৫ টাকায় নেমে এসেছে।
আর্গন ডেনিমসের শেয়ার প্রথম কার্যদিবসে ছিল ৮২ টাকা। ২৪ কার্যদিবসের ব্যবধানে এ শেয়ারের দর বর্তমানে ৪০.৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
লেনদেনের ১২ কার্যদিবসের মাথায় সামিট পূর্বাঞ্চলের দর ৯৪.৫০ টাকায় উঠেছিল। পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসে এ শেয়ারের দর নেমে আসে ৬৬.৬০ টাকায়। তবে এ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির হয়েছে বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ইতিমধ্যে এজন্য একটি কমিটিও গঠন করেছে কমিশন। বর্তমানে এ শেয়ারের দর ৫৩.৩০ টাকা।
সর্বশেষ লেনদেন শুরু হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক হতাশা। লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখতে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেও কোনো কাজ হয়নি। বরং লোকসানের পরিমান আরো বেড়েছে। নতুন কোম্পানি বাজারে এসে শুধুমাত্র আইপিও বিজয়ী বিনিয়োগকারীদের কিছুটা মুনাফা হয়েছে। সেকেন্ডারি মার্কেট অধিকহারে বিনিয়োগ হলেও লাভের মুখ দেখেনি কেউ। বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলে এ ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোনো ব্যবসার জন্য ক্রেতা-বিক্রোর চাহিদা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি যেখানে মুনাফা করা যায় না সে বাজারে ক্রেতার অভাব হবে এটাই স্বাভাবিক। নতুন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা যেহারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাতে আইপিও বাজার হোঁচট খেতে পারে।
শেয়ারনিউজ২৪